জীবনে মানুষ তাকেই ভালোবাসে যাকে সে সব থেকে বেশি পছন্দ করে। আর যদি এই ভালো লাগা ছোট থেকে তৈরি হয় তাহলে তো কথাই নেই। সত্যিকারের ভালোবাসাগুলো বেচেঁ থাকুক আজীবন।
আমি সুজন হোসেন (শাহীন) । এবার ডিগ্রি প্রথম বর্ষ। আমি ছোট থেকেই ডানপিটে স্বভাবের। কারন আমি বাবা মায়ের ছোট সন্তান। তবে আমার কাছের মানুষের আমায় খুব ভালোবাসে।
আর আমি? হুম আমি কারো জন্যই পাগল নই এখনো। শহরে থাকি আমরা।আমাদের পরিবারের নিজস্ব বাসা গ্রামে। এখানে আব্বুর ব্যবসার জন্য থাকতে হয়। আমার আব্বু আর আমার খালু একসাথে ব্যবসা করে। তাই আমাদের বাসা আর আমার খালা মনির বাসা একখানেই। আমরা উপরতলায় থাকি আর তারা নিচতলায়। আব্বু আর খালু মিলে বাসাটা বানিয়েছে। মোট এ তিনতলা। একদম নিচের তলা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তাহলে বুঝতেই পারছেন কে কোথায় থাকে। এসব কথা থাক।
খালামনির আর আমাদের মধ্যে খুব ভালো সম্পর্ক স্বাভাবিকভাবেই। খালামনির দুই সন্তান। একটা মেয়ে একটা ছেলে। ছেলেটার নাম হলো রাকিবুল।
এবার ক্লাস নাইনে। তাই আমার থেকে ছোট। তবে মেয়ে যিনি তিনি হচ্ছেন রাবেয়া ওরফে রাবেয়া আপু। আমার থেকে মাত্র তিন মাসের বড় আর ভাব নেয় তিন বছরের।রাবেয়া আপু আবার আমার এক ক্লাস সিনিয়র। আপু অবশ্য আমি বলি না তবে তার কথা হলো তাকে আপু বলতেই হবে। এই যেমন সেদিন....
আমিঃওই রাবেয়া কই যাচ্ছিস?
রাবেয়া/ ওই তোরে না আমি বলছি আমায় আপু বলে ডাকবি?
আমিঃএহহ আইছে আমার আপুরে। দুই না এক না শুধু তিনটা মাসের ব্যাপার আর তাতেই নাকি আপু।
রাবেয়া/ তো কি হইছে। বড় রা বড়ই। সে যদি এক সেকেন্ড এর জন্য হলেও তবুও।
আমিঃ আমি তোকে আপু বলতে পারবো না।রাবেয়া বলেই ডাকবো।
রাবেয়া/ ডাকিস তাহলে আমার কি। তোর কথা শোনার ও প্রয়োজন মনে করলাম না। যা ভাগ। বলেই চলে গেলো।
হুম ভিতরে ভিতরে রাগ অনেক আছে এই মেয়ের। তাই খালামনির বাসা গেলাম।... আমিঃঃ ও খালামনি?
রাবেয়ার আম্মুঃবল কি হইছে আবার।
আমিঃআচ্ছা তোমার মেয়ে কি খায় বলো তো।
খালা /কেন রে?
-আমিঃছোট থেকেই কি কমপ্ল্যান এর ডোজ বেশি দিছো নাকি? খালি বড় হওয়ার চেষ্টা করে।
খালা/ হাহাহাহা
আমিঃতার উপর নাকি তাকে আবার আগে ভাগেই স্কুলে দিয়েছিলে।তিন মাসের বড় আপু এখন এক ক্লাস বড়।
খালা/ পাগল বলছে কি শুনো। তিনমাসের বড় হলেও সাল কিন্তু আলাদা। আর তাই তোর খালু তারাতাড়ি দিয়েছিলো স্কুলে।
আমিঃহুম। আর তোমার মেয়ে এই ভাব এ বাচেঁই না।
খালা/ বাদ দে তো ওসব। হাতমুখ ধুয়ে আয়। খেতে দেই।
আমিঃএই জন্যে তোমায় এত ভালোবাসি। মনের কথা বুঝে যাও। খুব ক্ষুধা লাগছে। দাঁড়াও আসছি।
খালা/ আচ্ছা আয় আমি তোর জন্য খাবার রেডি করছি। আমি বুঝতেই পারি না। খালু আর খালামনির মতো মানুষের থেকে এরকম একটা মেয়ে কিভাবে জন্ম নিল।একদম আলাদা ধরনের। যাক বাবা আমার কি। যাই হাতমুখ ধুয়ে আসি। বাসায় বসে ফোন চালাচ্ছিলাম এমন সময় মহারানির আগমন।.... -
রাবেয়া/ সুজন আম্মু কে কি বলছিস?
আমিঃকই কিছু নাতো।
রাবেয়া/ সত্যি করে বল?
আমিঃনারে কিছু বলে নি। কি জানি খুজতে লাগলো।
রাবেয়া/ খালামনি...? খালামনি। তোমাদের বাসার ঝাড়ুটা কই?
আম্মুঃ কেন রে মা? ( ওহ বলে রাখা ভালো। আমি যেহেতু বাবা মায়ের ছোট সন্তান সেহেতু আমার বাবা মায়ের কোনো মেয়ে নেই। আর তারা এই কারনে আমার থেকেও রাবেয়াকে অনেক ভালোবাসে)
রাবেয়া/ তোমার ছেলে আমার নামে আম্মুকে বিচার দিয়ে আসছে।
আম্মুঃকি বিচার?
রাবেয়া/ আমি নাকি রাগী।আমার নাকি অনেক রাগ। আরো অনেক কিছু। ( সব তো সত্যি বলছি। আর অনেক কিছু কি এগুলাই তো বললাম শুধু। আজকে কপালে শনি রবি সব আছে মনে হচ্ছে।মনে মনে)
আম্মুঃ সুজন? রাবেয়া ঠিক বলছে?
আমিঃনা মানে আম্মু হ্যা।
আম্মুঃ রাবেয়া মা আমার তুই যতগুলা মারবি ততগুলাই আমার পক্ষ থেকে একস্ট্রা মারবি। বাসায় বসে খাওয়া আর মানুষের নামে বিচার দেওয়া বের করছি।
আমিঃ আম্মাগো কি কও তুমি।
-আম্মুঃ দাড়া শয়তান তোর শয়তানি বের করছি। আপনাদের কি মনে হয় আম্মুর মার খাওয়ার কোনো ইচ্ছা আছে আমার? তার সাথে ওই ডাইনিটার? না নেই। তাই তো তারা আমার দিকে আসার আগেই বাসা থেকে প্রস্থান করে ফেলি। আজকে বাসায় ঢুকতে দিবে কিনা কে যানে। আমার অবশ্য এসব চিন্তা নেই। বাসায় ঢুকতে না দিলে খালামনির বাসা আছে না। আর এমনিতেও খালামনির সামনে রাবেয়া কিছুই করতে পারবে না। তাই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলাম। আমি আর রাবেয়া একই কলেজেই পড়ি। আমার থেকে এক ক্লাস সিনিয়র তাই কলেজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার আগেই বলে দিছে যেনো আপু আপু বলি। নয়তো নাকি নাক ফাটাই দিবে নাম ধরে ডাকলে। আমিও কম যাই না। তাই দেখবো কি করে। একদিন কলেজের মাঠে বসে আছি। এমন সময় রাবেয়া আর ওর বান্ধুবিরা যাচ্ছিলো। তো আমি ভাবলাম এই সুযোগ। কাজে লাগাই। যেই ভাবনা সেই কাজ।.. - আমিঃ ওই রাবেয়া শুনতো?
(আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে)
আমিঃ রাবেয়া শুন না।
( রাগি লুক নিয়ে আমার কাছে আসলো। ওর বান্ধুবী গুলো কি জানি বলাবলি করছে) এসেই.... রাবেয়া/ কি হইছে?
আমিঃ না মানে তোর একস্ট্রা কলম থাকলে দেতো? বাসায় রেখে আসছি।
রাবেয়া/ এই জন্য ডাকলি?
আমিঃ হুম এই জন্যই তো। কলম বের করে ছুড়ে মারলো।বুঝতে পারছি ভালোই রাগিয়ে দিয়েছি। যাক আমি সফল। কিন্তু বাসায় এসে যা ঘটলো তারপর বুঝলাম যে আমি নিজের বিপদ নিজেই ডেকে এনেছি।
চলবে,,,,,,,, ।
#lovestory
0 Comments